♐ সত্য কতটা কঠোর হতে পারে এবং কতটা দুর্বিষহ হতে পারে একজন চাকরিজীবীর রোজের জীবন, তারই প্রমাণ দিলেন সিঙ্গাপুরের একটি সংস্থার এক কর্মী। তিনি তাঁর রেজিগনেশন লেটার বা পদত্যাগপত্রটি লিখেছেন এক টুকরো টয়লেট পেপারে! যার মোদ্দা কথা হল, কোম্পানি যেহেতু তাঁকে টয়লেট পেপারের মতোই ব্যবহার করেছে, তাই তিনিও টয়লেট পেপারেই নিজের পদত্যাগপত্র লিখছেন! ইতিমধ্যেই সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এক টুকরো টয়লেট পেপারে পেনে লেখা একটি 'রেজিগনেশন লেটার'!
𝔍ওই সংস্থার ডিরেক্টর অ্যাঞ্জেলা ইয়োহ নিজেই তাঁর লিঙ্কডইন প্রোফাইলে এমন একটি পদত্যাগপত্র পোস্ট করেছেন এবং সেই মুহূর্তের অভিজ্ঞতা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন। চাকরি ছাড়ার সময় সেই কর্মী যেমনটা তাঁকে বলে গিয়েছিলেন, সেই কথাগুলিই অ্যাঞ্জেলাও হুবহু লিখেছেন - 'আমার নিজেকে টয়লেট পেপার মনে হত। যখন প্রয়োজন হবে, তখনই ব্যবহার করা হবে। তারপর দ্বিতীয় কোনও কিছু না ভেবেই ছুড়ে ফেলে দেওয়া হবে।'
ಌঅ্যাঞ্জেলা জানিয়েছেন, কাজ ছেড়ে যাওয়া ওই কর্মীর এই কথাগুলো শুধু যে তাঁর মনে গেঁথে গিয়েছে, তাই নয়। এটি তাঁর মনে এক গভীর প্রভাব ফেলেছে। মনে করিয়ে দিয়েছে, কর্মস্থলে স্বাস্থ্যকর কর্মসংস্কৃতি বজায় রাখা কতটা জরুরি।
🌌এই প্রসঙ্গে অ্য়াঞ্জেলা আরও লিখেছেন, 'আপনার কাছে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের প্রকৃত প্রশংসা করুন। যাতে তাঁরা যদি ভবিষ্যতে আপনার সংস্থা ছেড়ে চলেও যান, সেটাও তাঁরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সঙ্গেই করতে পারেন, বিরক্ত হয়ে নয়। এই ধরনের অভিজ্ঞতাকে আমি কখনই আনুগত্যের অভাব বলব না। এটি আসলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার সংস্কৃতিই বেআব্রু করে দিচ্ছে।'
ꦡঅ্যাঞ্জেলা আরও লিখেছেন, 'কাউকে শুধুমাত্র সংস্থায় আটকে রাখার জন্য তাঁর প্রশংসা করে লাভ নেই। এতে আসলে বোঝা হবে, একজন মানুষকে কতটা গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, সেটা শুধুমাত্র এই জন্য নয় যে তিনি কতটা কাজ করছেন, বরং এই জন্য যে তিনি মানুষ হিসাবেও সংস্থার কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।'
🅠অ্যাঞ্জেলা তাঁর পোস্টের একেবারে শেষের অংশে লিখেছেন, 'যদি মানুষ মনে করে, তার কাজের যথাযথ মূল্য়ায়ন করা হচ্ছে না, তাহলে এটাই হল বদলের সময়। ছোট ছোট প্রশংসাও অনেক বড় পরিবর্তন আনতে পারে। এটা আজ থেকেই শুরু করে দিন।'
༒একইসঙ্গে, অ্য়াঞ্জেলা এক টুকরো টয়লেট পেপারে লেখা একটি পদত্যাগপত্রের ছবিও তাঁর সোশাল মিডিয়া প্রোফাইলে আপলোড করেছেন। তাতে লেখা রয়েছে - 'আমি আমার পদত্যাগপত্র লেখার জন্য এই ধরনের একটি কাগজ বেছে নিয়েছি প্রতীক হিসাবে, যাতে আমি বোঝাতে পারি, এই সংস্থা আমার সঙ্গে ঠিক কেমন আচরণ করেছে। আমি ছাড়লাম।'
🌳যদিও অ্য়াঞ্জেলা তাঁর পোস্টে কোথাও এটা স্পষ্ট করেননি যে সংশ্লিষ্ট কর্মীই এই পদত্যাগপত্রটি লিখেছিলেন, নাকি এটি একটি প্রতীকী ছবি। কিন্তু, এই পোস্ট ভাইরাল হয়েছে মুহূর্তে। বন্যা বয়ে গিয়েছে পোস্টের কমেন্ট সেকশনে।
🅘একজন যেমন লিখেছেন - 'ব্যতিক্রমী! আমি বিষয়টিকে সম্মান জানাচ্ছি। বহু সময় আগে আমিও ঠিক এরকমই একটি কাজ করেছিলাম।'
𓄧আর একজন আবার লিখেছেন, 'অনেক সময় কর্মীরা সংস্থার জন্য চাকরি ছাড়েন না। তাঁরা চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন মাঝামাঝি পদে থাকা ম্যানেজারদের জন্য। এবং এটা প্রায়ই ঘটে।'