ܫ একদিকে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও প্রবল ভারত বিরোধিতা এবং অন্যদিকে কার্যত ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে চিন। এমন একটি প্রেক্ষাপটে সমস্ত দ্বন্দ্ব ও টানাপোড়েন মিটিয়ে 'চিকেন'স নেক করিডর' (যাকে শিলিগুড়ি করিডরও বলা হয়) প্রকল্পে সম্মতি জানাল রাজ্য সরকার।
🍸আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, নবান্নের একেবারে শীর্ষস্তর থেকে এই সম্মতি প্রদান করা হয়েছে। যা ভারতের বর্তমান প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির অবস্থানের প্রেক্ষিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
⛦প্রসঙ্গত, উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে দেশের বাকি অংশের সরাসরি সংযোগ স্থাপন করে এই চিকেন'স নেক করিডর। ইদানীংকালে বারবার যে করিডর বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে বাংলাদেশি কট্টরপন্থীরা।
ꦓচিকেন'স নেক করিডর প্রকল্পের অধীনে এক বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ব্যাপক পরিকাঠামো উন্নয়ন করতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু, এই কাজের জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যের পারস্পরিক সহযোগিতা ও বোঝাপড়া দরকার। এত দিন সেখানেই একটি বিষয় নিয়ে গোল বেধেছিল।
🤡রাজ্য সরকারের দাবি ছিল, এই প্রকল্পের যে জাতীয় এবং কৌশলগত গুরুত্ব রয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারকে আগে সেই শংসাপত্র রাজ্যকে দিতে হবে। তারপরই রাজ্যের তরফে প্রকল্পের জন্য সম্মতি জানানো হবে। কিন্তু, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও চিনের মনোভাব বুঝেই আর সেই শংসাপত্র পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করেনি রাজ্য সরকার। তারা এই প্রকল্পে সম্মতি জানিয়ে দিয়েছে।
﷽এই প্রকল্পের অধীনে সীমান্ত এলাকার ১০০ কিলোমিটারের মধ্য়ে এমন যোগাযোগব্যবস্থা ও পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে, যাতে আগামী দিনে সহজেই ভারত-চিন সীমান্তে অবস্থিত সিকিমের নাথু লা-এ পৌঁছে যাওয়া যাবে।
ꦯএই প্রকল্পের অধীনে তিস্তা নদীর উপর করোনেশন ব্রিজের বিকল্প আরও একটি নতুন সেতু তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়াও, পার্বত্য বনাঞ্চলের ভিতর দিয়ে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি উড়ালপথ (এলিভেটেড করিডর) তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ꦕপাশাপাশি, এই উড়ালপথের সমান্তরালে সেবকের সেনা ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত রাস্তাটিও আরও চওড়া করা হবে এবং সেই সড়ক পথের সঙ্গে যুক্ত থাকবে ১০ ও ১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক। আর সেই কারণেই দেশের বাকি অংশ থেকে নাথু লা-এ পৌঁছনো এখনের তুলনায় অনেক বেশি সহজ হবে।
ꦬপ্রসঙ্গত, এই এলাকায় যেহেতু বন ও বন্যপ্রাণের আধিক্য রয়েছে, তাই প্রকল্প রূপায়ণের জন্য বন, পরিবেশ এবং বন্যপ্রাণ সংক্রান্ত ছাড়পত্রের প্রয়োজন ছিল। সেই ছাড়পত্র দেওয়ার জন্যই প্রকল্পটির জাতীয় সুরক্ষা এবং কৌশলগত গুরুত্ব সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় শংসাপত্র চেয়েছিল রাজ্য। কিন্তু, যেহেতু নবান্ন ইতিমধ্য়েই প্রকল্প রূপায়ণে সম্মতি প্রদান করেছে, তাই আর ওই ছাড়পত্রের কোনও প্রয়োজন নেই।
🌺প্রসঙ্গত, বন (সংরক্ষণ ও সমবর্ধন) অধিনিয়ম এবং বন (সংরক্ষণ) সংশোধনী আইন অনুসারে, যেহেতু এই এলাকা আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে আকাশপথে ১০০ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্য়ে অবস্থিত, তাই কেন্দ্র-রাজ্যের যৌথ আলোচনায় এই প্রকল্পকে 'কৌশলগত এবং জাতীয় সুরক্ষার প্রশ্নে অতি প্রয়োজনীয়' হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। তাই, এক্ষেত্রে পরিবেশ সংক্রান্ত অনুমোদনের প্রয়োজন নেই।