বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই কর্পোরেট জগতে চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে '৯০ ঘণ্টা কাজ বিতর্ক'। কয়েকদিন আগেই লারসেন অ্য়ান্ড টুব্রোর সিইও এসএন সুব্রহ্মণ্যন সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজ করার নিদান দিয়েছিলেন। এই আবহে আমূলের তরফ থেকে একটি ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করা হল। সেখানে একজন স্যুট পরা ব্যক্তিকে ক্যালেন্ডারের দিকে হাত তুলে থাকতে দেখা গিয়েছে। তিনি এক রবিবারের দিকে আঙুল নির্দেশনা করে আছেন। আর আমূল গার্ল পিছনে হাঁ করে তাকিয়ে আছে। সেই কার্টুনে লেখা - 'শ্রম ও পরিশ্রম? আমূল প্রতিদিন আপনার রুটির দিকে নজর রাখবে।' (আরও পড়ুন: 🧸আগে মিলেছিল ৪.৫ কোটি, ৬০০০ কোটি টাকার সেই জালিয়াতি মামলায় এবার বেহালা-হাওড়ায় ED)
আরও পড়ুন: ꧃মন্দিরে ছোট্ট ছেলের সামনে বাবা অমিত শাহের 'বকুনি' শুনলেন জয়! ভাইরাল ভিডিয়ো
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল সাক্ষাৎ চলাকালীন সুব্রহ্মণ্যনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কেন লারসেন অ্য়ান্ড টুব্রোর মতো মাল্টি-বিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি সংস্থা এখনও কর্মীদের শনিবার কাজ করাচ্ছে? তার জবাবে সুব্রহ্মণ্যন নাকি বলেছিলেন, 'আমার এটা ভেবে অনুশোচনা হচ্ছে যে আমি আপনাদের দিয়ে রবিবারও কাজ করাতে পারছি না। আমি যদি আপনাদের দিয়ে রবিবারও কাজ করাতে পারতাম, তাহলে আমি খুশি হতাম। কারণ, আমি রবিবার কাজ করি। বাড়িতে বসে আপনারা কী করবেন? কতক্ষণ নিজের বউয়ের দিকে তাকিয়ে থাকবেন? ধুর, অফিসে চলে যান। কাজ করুন।' এরপরই সুব্রহ্মণ্যন তাঁর এক অভিজ্ঞতা কর্মীদের সঙ্গে শেয়ার করে বলেন, 'একবার এক চিনা ব্যক্তির সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। তিনি দাবি করেছিলেন, চিন অনায়াসেই আমেরিকাকে হারিয়ে দিতে পারে। কারণ, চিনারা সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজ করেন। সেখানে মার্কিনিরা সপ্তাহে মাত্র ৫০ ঘণ্টা কাজ করেন। তাই আপনাকে যদি বিশ্বের সেরা হতে হয়, তাহলে প্রত্যেক সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা করে কাজ করতেই হবে। আপনারা সেটা শুরু করে দিন।' পরে সুব্রহ্মণ্যনের এই মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই বিতর্কের ঝড় ওঠে। এবং অনেক শিল্পপতি এই নিয়ে নিজেদের মতামত প্রকাশ করেন। (আরও পড়ুন: 🏅প্রস্তাব পেশ তো হল, এবার কি? বাংলাদেশ সংস্কারে কত সময় লাগবে ইউনুসের?)
আরও পড়ুন: ꩲআদানি, SEBI প্রধানকে নিয়ে বিস্ফোরক সব দাবি করা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ বন্ধ হচ্ছে
আরও পড়ুন: 🍬সাংবিধানিক সংস্কারে বাংলাদেশের নাম বদলের সুপারিশ, কী হতে পারে নয়া নাম?
এই আবহে শিল্পপতি আনন্দ মহিন্দ্রাকে এই ইস্যুতে প্রশ্ন করা হয়েছিল একটি কনক্লেভে। সেখানে তিনি বলেছিলেন, 'ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজের অমানবিক তত্ত্বে মোটেও বিশ্বাসী নই আমি। আমি এক্ষেত্রে কাজের সময় নয়, কাজের গুণমানকে গুরুত্ব দিই। আপনি আমাকে প্রশ্ন করতে পারেন, আমার কাজের মান কেমন। আমি কত ঘণ্টা কাজ করি, সেই প্রশ্ন আমাকে করবেন না।' তিনি আরও বলেছিলেন, 'আমি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ নেই কারণ আমি একাকী। আমার স্ত্রী অসাধারণ। এবং আমি তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকতে ভালোবাসি!' পরে আনন্দ মহিন্দ্রার বক্তব্যের রেশ টেনে সেরম ইনস্টিটিউটের আদর পুনাওয়ালা বলেন, 'আপনি ঠিক বলেছেন আনন্দ মহিন্দ্রা। আমার স্ত্রী নাতাশা পুনাওয়ালা তো রবিবার আমার দিকে তাকিয়ে থাকতে ভালোবাসে। ও মনে করে আমি অসাধারণ। সবসময়ই কাজের সময়ের থেকে গুণগত মান বেশি গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত। ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্স থাকা উচিত।' এদিকে সিইএসসি, আইপিএল দল লখনউ সুপার জায়ান্টসের মালিক সঞ্জীব গোয়েঙ্কা এক টুইট করে লেখেন, 'স্ত্রীর থেকে মূল্যবান কেউ নন। আমি অনন্তকাল তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকতে পারি।' (আরও পড়ুন: ꧑সম্পন্ন দুই স্যাটেলাইটের ডকিং, হাল না ছেড়ে মহাকাশে বড় সাফল্য ইসরোর)
ඣপরে এই বিতর্ক নিয়ে লারসেন অ্য়ান্ড টুব্রোর হিউম্যান রিসোর্স প্রধান সোনিকা মুরলীধরন দাবি করেন, সংস্থার চেয়ারম্যানের মন্তব্যের পুরোপুরি ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। ওই মন্তব্যের আগে কী বলেছেন, পরে কী বলেছেন, সেইসব বিবেচনা না করেই তাঁকে নিয়ে অহেতুক সমালোচনা করা হচ্ছে। কখনওই সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজের ‘নিদান’ দেননি বা ঘুরিয়েও সেটা বলতে চাননি। একেবারে হালকা চালে সুব্রহ্মণ্যন সেই মন্তব্য করেছিলেন বলে দাবি করেছেন সোনিকা। সোনিকার কথায়, 'উনি প্রত্যেক কর্মীকে নিজের বর্ধিত পরিবারের অংশ হিসেবে বিবেচনা করেন। একতা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বোধ জাগিয়ে তোলেন, যা আজকের কর্পোরেট দুনিয়ায় বিরল।' তবে তাতেও বিতর্ক থামার নাম নেই।