🐽 ব্লু স্মার্ট ক্যাব কেলেঙ্কারিতে তোলপাড় গোটা দেশ। আর এই কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়েছে জাগ্গি ভাইয়েদের। সেবি তদন্তের পর জেনসল ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড এবং জাগি ভাইয়েদের বিরুদ্ধে কড়া নির্দেশ দিয়েছে। অভিযোগ, ওই দুই ভাই ইলেকট্রিক গাড়ি কেনার নামে সরকারের কাছে বিপুল অঙ্কের ঋণ নিয়ে, তা দিয়ে ব্যক্তিগত বিলাসিতা পূরণ করেছেন। যার মধ্যে অন্যতম হল, গুরুগ্রামের অত্যাধুনিক আবাসিক প্রকল্প ‘দ্য ক্যামেলিয়াস’-এ ৪৩ কোটি টাকার একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, যা একটি বিস্তৃত গলফ কোর্সের দৃশ্যে সমৃদ্ধ।মার্কিন ব্র্যান্ড টেলরমেডের ২৬ লক্ষ টাকার একটি প্রিমিয়াম গলফ সেট। শত শত কিলোমিটার দূরে পুনের একটি প্রায় পরিত্যক্ত কারখানা, যেখানে লক্ষাধিক ইলেকট্রিক যানবাহন (ইভি) উৎপাদনের পরিকল্পনা ছিল। এছাড়াও, তাদের মা এবং স্ত্রীদের জন্য ১১ কোটি টাকারও বেশি অর্থ স্থানান্তর। এই সবই ভারতের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে সবচেয়ে বড় জালিয়াতির ঘটনাগুলির মধ্যে একটি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
▨সেবি-র তদন্তে দেখা গেছে, ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন (ইপিসি) ফার্ম জেনসল ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড এবং ইলেকট্রিক ক্যাব সার্ভিস ব্লুস্মার্টের প্রোমোটার অন্মল সিং জাগ্গি এবং পুনীত সিং জাগ্গি সরকারি ঋণদানকারী সংস্থাগুলির কাছ থেকে ১,৭০০টি ইলেকট্রিক গাড়ি কেনার জন্য ২৬২ কোটি টাকার ঋণ ব্যক্তিগত বিলাসিতা এবং সম্পর্কিত সংস্থাগুলিতে স্থানান্তর করেছেন। সেবি’র এই তদন্ত ২০২৪ সালের জুন মাসে শেয়ার মূল্য কারচুপি এবং তহবিল স্থানান্তরের অভিযোগের ভিত্তিতে শুরু হয়। ১৫ এপ্রিল ২০২৫-এ জারি করা সেবি’র আদেশের পর জেনসলের শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে দ্রুত প্রস্থানের প্রবণতা দেখা গেছে। ওয়েলরে সোলার ইন্ডাস্ট্রিজের প্রায় সম্পূর্ণ শেয়ার (৯৯%) বর্তমানে ললিত সোলাঙ্কির হাতে রয়েছে, যিনি ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত জেনসল গ্রুপে রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেছিলেন। এই জটিল লেনদেনের মাধ্যমে ওয়েলরে থেকে জাগি ভাইয়েদের কাছে ৩৯ কোটি টাকা স্থানান্তর করা হয়, যার মধ্যে অন্মল জাগ্গি ২৬ কোটি টাকা এবং পুনীত জাগ্গি ১৩ কোটি টাকা পান।
🧔সেবি’র তদন্তে প্রকাশ পেয়েছে যে, জেনসল ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে প্রথম রেকর্ড করা ঋণ খেলাপি লুকানোর জন্য ইন্ডিয়ান রিনিউয়েবল এনার্জি ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি এবং পাওয়ার ফাইনান্স কর্পোরেশন-এর জাল নথি তৈরি করেছিল।২০২১-২৪ সালের মধ্যে জেনসল ৬,৪০০টি ইলেকট্রিক যানবাহন কেনার জন্য ৮৩০ কোটি টাকার পরিকল্পনা গ্রহণ করে, যা ব্লুস্মার্টের কাছে লিজ দেওয়ার কথা ছিল। এই অর্থের ৮০ শতাংশ আইআরইডিএ এবং পিএফসি থেকে ঋণ হিসেবে এবং বাকি ২০ শতাংশ জেনসলের ইক্যুইটি অবদান হিসেবে আসার কথা ছিল। কিন্তু ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত মাত্র ৪,৭০৪টি ইভি ৫৬৮ কোটি টাকায় ক্রয় করা হয়েছিল, যার ফলে ২৬২.১৩ কোটি টাকার অর্থের হিসাব দেওয়া যায়নি।আর সেবি’র এই তদন সামনে আসতেই জেনসলের পাশাপাশি ব্লুস্মার্টের ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সেবি পদক্ষেপ নিয়েছে, জেনসল এবং জাগ্গি ভাইরা সিকিউরিটিজ মার্কেটে অংশগ্রহণ করতে পারে না এবং স্টক স্প্লিট স্থগিত করা অন্তর্ভুক্ত, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য গৃহীত হয়েছে।